বগুড়ায় এক পরিবারের নারী–শিশুসহ সাতজন নিখোঁজ!

বগুড়ায় এক পরিবারের নারী ও শিশুসহ সাতজন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। গত চার দিন ধরে তাঁদের কোনো সন্ধান মিলছে না। এ ঘটনায় আজ শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই পরিবারের প্রধান জীবন মিয়া। গত ৩ জুলাই দুপুরে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে এক সঙ্গে নিখোঁজ হন সাতজন।

নিখোঁজ নারী ও শিশুরা হলেন—জীবন মিয়ার স্ত্রী রুমি বেগম (৩০), তাঁর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বৃষ্টি খাতুন (১৩), যমজ দুই ছেলে হাসান ও হোসেন (৬), শাশুড়ি ফাতেমা বেবি (৫০), শ্যালক বিক্রম আলী (১৩) ও শ্যালিকা রুনা খাতুন (১৭)। জীবন মিয়া জানান, তিনি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের বাসিন্দা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি লালমনিরহাট জেলা সদরে। গত ১০ বছর ধরে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। একই বাসায় স্ত্রী সন্তান ছাড়াও শাশুড়ি ও শ্যালক-শ্যালিকা বসবাস করতেন।

তাঁর শাশুড়ি নারুলী পুলিশ ফাঁড়িতে রান্নার কাজ করেন। আর তিনি পুরাতন ফ্রিজ কেনাবেচার দোকান পরিচালনা করেন। জীবন মিয়া বলেন, ‘গত ৩ জুলাই দুপুরে বাড়িতে ভাত খেতে গিয়ে দেখি বাসায় কেউ নেই। স্ত্রীর ফোন বন্ধ। শাশুড়ির ফোন বাসাতে রেখে গেছেন। পরনের কাপড়চোপড় ছাড়া অন্য কিছু তাঁরা নিয়ে যাননি। পরে লালমনিরহাটে শ্বশুরবাড়িতে খোঁজ নিয়ে সেখানেও সন্ধান পাইনি। তিনি আরও বলেন, ‘লালমনিরহাট থেকে নানিশাশুড়ির কাছে জানতে পারি, এক মাস আগে এক ব্যক্তি শাশুড়ি ও স্ত্রীকে ভালো চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমার ধারণা, অপরিচিত ওই ব্যক্তির চাকরির প্রলোভনে তাঁরা মানবপাচারের শিকার হয়েছেন।

নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফাতেমা বেবি লালমনিরহাট যাওয়ার কথা বলে গত ২ জুলাই ছুটি নেন। ৬ জুলাই তাঁর ফিরে আসার কথা। ফাঁড়িতে রান্নার কাজে না আসায় তাকে ফোন করি। তখন জামাই ফোন রিসিভ করে নিখোঁজের বিষয়টি জানান। এরপর তাঁকে পুলিশ ফাঁড়িতে ডেকে বিস্তারিত শুনে জিডির ব্যবস্থা করা হয়। তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক সঙ্গে সাতজন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, জীবন মিয়ার স্ত্রী ও শাশুড়ি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবেও কিছু দেনা থাকার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তারপরেও তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’